ওয়ায়েস কারণী (রহঃ) এর ঘটনা

লিখেছেন লিখেছেন সচেতন মুসলিম ০৬ জুন, ২০১৪, ০৭:১৭:৫৩ সকাল

বারাবারি পর্ব ২।

হযরত ওমর (রাঃ) নিজ শাসনকালে রাসুল (সঃ) এর পূর্ব নির্দেশ মত আলী (রাঃ) কে নিয়ে মহা তাপসের সন্ধানে কুফারপথে বেড়িয়ে পরেন। কুফার মসজিদে খুৎবা চলাকালীন মুসুল্লিদের কাছে ওয়ায়েস কারণীর কথা জান্তে চাইলে জানা গেল সে একটা পাগল। লোকালয় ছেড়ে জনবিরল এলাকায় বাস করে। মাঠে উট চড়ায়। দিন শেষে শুখনো রুটি খায়। মানুষ হাসলে সে কাঁদে। মানুষ কাঁদলে সে হাসে।

তারা দুজন কারণ এলাকায় গিয়ে দেখেনওয়ায়েস কারণী নামাজ পড়ছেন। পাশে তার উটের পাল চড়ছে ফেরেস্তারা তা দেখাশুনা করছে।

প্রশ্নঃ আপনার নাম কি?

উত্তরঃ আবদুল্লাহ।

প্রশ্নঃ আমরা সবাইতো আব্দুল্লাহ। আসল নাম কি?

উত্তরঃ ওয়ায়েস। (ওনার নাম ওয়ায়েস। আর কারণী হচ্ছে স্থানের নাম)।

প্রশ্নঃ দয়াকরে আপনার হাত খানা দেখান

উত্তরঃ ওয়ায়েস কারণী হাতবাড়িয়ে দিলেন। রাসুল (সঃ) এর বর্ণনার সঙ্গে হুবুহু মিল। সে সাদা দাগ। অখচ শ্বেতী নয়। ওমর (রাঃ) হাতে চুমু দিলেন।

পরিচয় শেষ ওমর (রাঃ) তাকে রাসুল (সঃ) এর জুব্বাটি দিলেন। এবং বললেন রাসুল (সঃ) নিজ উম্মতের জন্য আপনাকে দোয়া করতে বলেছেন। ওয়ায়েস কারণী একটু দুরে গিয়ে সেজদায় পড়ে দোয়া করলেন।

দৈববাণী হল,হে ওয়ায়েস! তোমার দোয়ায় কিছুউম্মতকে মাফ করা হল।

ওয়ায়েস বলল সবাইকে মাফনা করলে আমি নবীজির জুব্বা পরবনা।

আকাশ বাণী হল কয়ক হাজার মাফকরা হবে।

অতপর ওমর (রাঃ) ও আলী (রাঃ) দ্বয়ের উপস্থিতির কারনে দোয়ায় ব্যঘাৎ ঘটল। ওয়ায়েস কারণী বিরক্ত হলেন, বললেন আপনারা কেন আসলেন? আমি নবীজির সব উম্মতদেরকে মাফ করানোর চেষ্টা করছিলাম। ওয়ায়েস কারণী (রঃ) এর কাছ ওমর (রাঃ) এর খেলাফতকে তুচ্ছ মনে হল। ওমর (রাঃ) অভিভূত হলেন। সামান্য একলোক অথচ অসামান্য। এর তুলনায় খেলাফত তুচ্ছ।

বললেন কেউ কি একটি রুটির বিনিময়ে খেলাফতের দায়িত্ব নিবে?

ওয়ায়েস কারণী বললেন বোকারাই নিতে পারে। সত্যিই যদি মন না চায় তবে ছুরে ফেলে দিলেই তো হয়। যার মন চায় কুড়িয়ে নেবে। ওসব বিনিময়ের কথা কি বলছেন?

ওয়ায়েস রাসুল (সঃ) এর পোশাক পরে বললেন আল্লাহ এ অধমের প্রার্থনায় প্রতিশ্রুতি দিয়ছেন রাবী ও মোজা গোত্রের ছাগ পাল (ঐতিহাসিকদের মতে ২০ সহস্রাধীক) এর লোমের সমান নবীর উম্মতদেরকে মাফ করে দেবেন।

ওমর (রাঃ) বললেন রাসুল (সঃ) কে এত ভালবাসেন কিন্তু দেখতে গেলেননা কেন?

আপনারা দেখেছেন?

হ্যাঁ।

তাহলে বলেনতো তার ভ্রু দটি জোড়া ছিল? নাকি আলাদা?

তরা উত্তর দিতে পারলনা।

আবার প্রশ্নঃ আপনারাতো রাসুল (সঃ) কে খুব ভালবন তাইনা?

নিশ্চই।

'তাহলে আপনাদের মুখে দাত থাকে কি ভাবে? ওহুদের যদ্ধ রাসুল (সঃ) এরদাত ভাঙলে সম ব্যথী হয়ে আপনারা আপনাদের দাঁত ভাঙলেন না কেন? অথচ দাবি করেন তাকে খুবভালবসেন। আর শুনুন আমি তাকে চোখে দেখিনি। ওহুদের যদ্ধে তার কোন দাঁতটা ভাঙ্গে তাও দেখিনি। তাই নবীজির দাঁত না থাকলে আমি আমার দাঁত রাখি কোন মুখে? অতপর একটি দাঁত ভেঙ্গে ফেললাম। পরেভাবলাম নবীজির হয়ত অন্যটা ভাঙ্গছে। তাই একটি একটি করে আমার সবগুলো দাঁতভেঙ্গে ফেলেছি।

তথ্যঃ তাযকেরাতুল আউলিয়া।

যা জানলামঃ

ওয়ায়েস কারণী (রহঃ) অনেক বড় বুজুর্গ। তিনি আলী (রাঃ) এবং ওমর (রাঃ) দ্বয়ের থেকেও বড় বুজুর্গ। এবং তিনি সরাসরি আল্লাহ (সুবঃ) 'র সাথে কথা বলতেন।

শিক্ষণীয়ঃ

শত্র যখন আমার বাবাকে মেরে একটি ঠ্যাং ভেঙ্গে দিবে- তখন আমাকে তার মোকাবেলা করতে যেতে হবেনা। শুধুমাত্র ঘরে বসে থেকে নিজেকে নিজের ঠ্যাং দু'টি ভেঙ্গে ফেলতে হবে। কারন আমি আমার বাবাকে অনেক ভালবাসি। শত্রুরা তার একটি ঠ্যাং ভেঙ্গে দিয়েছে- তার ঠ্যাং না থাকলে আমি আমার ঠ্যাং রাখব কি করে???

ও হ্যাঁ। আমার জন্য আরেকটা সুযোগ আছে। আমার যে সমস্ত ভাইরা নিজেদের জীবন বাজি রেখে শত্রুর মোকাবেলা করেছে তাদেরকে উপহাস করব। তোমরা তাকে ভালবাসার দাবী কর - আর নিজেরা ঠ্যাং নিয়া ফটিং মারো। আর দেখ আমি আমার দুই ঠ্যাং ঘ্যাচাং করে দিয়েছি।

সমাচারঃ

ওয়ায়েস কারণী (রহঃ) যেদিন রাসুল (সঃ) এর মৃত্যু সংবাদ শুনেছেন সেদিন তিনি সম ব্যাথি হয়ে সুইসাইট খাইতে পারতেন।

কিন্তু তিনি সেটা কেন করেন নি তা আমার বোধগম্ম নয়।

বিষয়: বিবিধ

১৪৫০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

231281
০৬ জুন ২০১৪ সকাল ০৮:৪৯
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ও হ্যা, আর ফেরেশতাদের কাজ হল ওয়ায়েজের ছাগল পাহারা দেওয়া, আর রসূলের(সাHappy জীবনে ইসলাম অসম্পুর্ণ ছিল,যদিও আল্লাহ শেষে আয়াত নাযিল করে বলেছেন, ...দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম...এরপর বাকী বাণী ওয়ায়েজের উপর অবতীর্ণ হয়েছে.....

যা সত্য:
রসূল(সাHappy বলেছিলেন-ওয়াজেরে দোয়া কবুল হয়,আল্লাহ তাকে ভালবাসেন। কেউ ইচ্ছা করলে তাকে দিয়ে দোয়া করিয়ে নিতে পারে। এটা সহি হাদীস, বুখারী হলেও হতে পারে।

ওয়ায়েজ তার অসুস্থ মায়ের সেবা করার কারনে মদীনা আসতে পারেননি। কিন্তু তিনি প্রতিনিধির মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন এবং ইসলাম পালন করতেন। যতদূর মনে পড়ছে...তার মায়ের মৃত্যুর পর তিনি রোম অথবা পারস্যের হিজাদে অংশ নিয়ে শহীদ হয়েছিলেন।

আপনি দারুনভাবে বিষয়টি তুলে ধরেছেন...জাজাকাল্লাহ
231290
০৬ জুন ২০১৪ সকাল ০৯:৪৩
ইমরান ভাই লিখেছেন : জাজাকাল্লাহু খায়রান। Rose Rose
231410
০৬ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৬
নূর আল আমিন লিখেছেন : ভাল্লাক্সে অনেক
কিছু জানতে পারলাম
লিখে যান আপনার
মতো
||

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File